, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে : সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা জৈন্তাপুরে ব্যবসায়ীর উপর সন্ত্রাসী হামলায় আদালতে মামলা দায়ের ‘সিলেটের পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত এটা বৈষম্যের শামিল’ অসমর্থ মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে : জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসান নির্বাচনের আগেই বয়কট একাংশের : প্রশ্নবিদ্ধ সিলেট উইমেন চেম্বার সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি সিলেটে প্রতিবেশীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি নেত্রীর পদ স্থগিত আমেরিকা ইউরোপের ৫টি দেশসহ উচ্চ শিক্ষার জন্য তিন সহস্রাধিক রেজিষ্ট্রেশন স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালকের দেওয়ানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে

সিলেট থেকে বন্যায় ভেসে যাওয়া যুবককে দুই বছর পর বান্দরবানে খুঁজে পেলো পরিবার

গত দুই বছর আগে সিলেটের কানাইঘাট শ্রীপুর থেকে হারিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন সন্তান আশিকুর রহমানকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে বান্দরবান থেকে খুঁজে পেলেন তার মা।

সোমবার (১০ মার্চ) সকালে সামাজিক গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বান্দরবান রাজামাঠ এলাকায় তার পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয় তাকে।

তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত দুই বছর আগে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা শ্রীপুর এলাকা থেকে বাজারে যাওয়ার পর হারিয়ে যায় আশিকুর রহমান। দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন দরগা-মাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি তাকে। গত বছর বন্যায় ভেসে গেছেন বলে ধারণা করেছিলেন তার পরিবারের লোক জন। তবে কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলের ভিডিও দেখেন তার মা ও পরিবারের লোকজন। পরে ওই কন্টেন ক্রিয়েটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আজ (সোমবার) বান্দরবান পৌঁছে ছেলেকে বুঝেনেন তার মা মরিয়ম বেগম।

বান্দরবানের কন্টেট ক্রিয়েটর উম্মে হুমায়রা বলেন, মার্চ মাসের তিন তারিখে বালাঘাটা থেকে তিন নাম্বার (থানচি বাস স্টেশন) ব্যক্তিগত কাজে গিয়ে দেখতে পাই ভারসাম্যহীন আশিকুর রহমান ড্রেন থেকে ময়লা খাবার কুড়িয়ে খাচ্ছে। দেখে তার কাছে গিয়ে ময়লা খাবারটি কেড়ে নিয়ে ভালো শুকনা খাবার দেন। এরপর নাম ও ঠিকানা জেনে নিয়ে তিনদিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করার পর আশিকুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। রোববার বিকেলে সিলেট থেকে রওনা দিয়ে সোমবার সকালে বান্দরবানে পৌঁছায়। আশিকুর রহমানকে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান তিনি। এসময় তিনি যুব সমাজের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, এরকম মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ কোথাও দেখা পেলে সহানুভূতির সঙ্গে দেখে সহযোগিতা করলে সেই ভারসাম্যহীন লোকের পরিবারের সদস্যরা হয়তো পরিবারের কাছে ফিরতে পারবে। তখন কেউ ফিরে পাবে তার সন্তানকে ও কেউ ফিরে পাবে তার বাবা-মাকে।

মরিয়ম বেগম বলেন, তার তিন ছেলে এক মেয়ে তার মধ্যে আশিকুর মেজো। দুই বছর আগে হারিয়ে যাওয়ার পর কতো দরগা, মাজারে খুঁজেছিলেন তার প্রিয় সন্তানকে কিন্ত কোথাও না পেয়ে একরকম ছেলেকে পাওয়ার আশায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। গতবছরের বন্যায় ভেসে গিয়ে তার ছেলে আশিকুর রহমান হয়তো মারা গেছেন বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু দু’দিন আগে (শনিবারে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া একজনের ভিডিওর মাধ্যমে জানতে পারেন তার ছেলে বান্দরবানে বেঁচে আছে। তখনই বান্দরবানের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর উম্মে হুমায়রার সঙ্গে যোগাযোগ করে রোববার বিকেলে পরিবারের চার সদস্য নিয়ে সিলেট থেকে এসে সোমবার সকালে বান্দরবানে পৌঁছে উম্মে হুমায়রার সঙ্গে দেখা করে ছেলে আশিকুর রহমানকে বুঝে পেয়েছেন। হারানো সন্তান ফিরে পেয়ে মরিয়ম বেগম আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, একজন ইসলাম ধর্মাবলম্বী হজ্ব করে যেরকম আনন্দে খুশি হয়ে থাকেন। তিনিও তার হারানো ছেলে ফিরে পেয়ে অনুরুপ সেই রকম খুশি হয়েছেন।

এসময় আশিকুর রহমানের পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি বান্দরবানের যুবসমাজের সমাজসেবী সদস্যরা ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয়

সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত

সিলেট থেকে বন্যায় ভেসে যাওয়া যুবককে দুই বছর পর বান্দরবানে খুঁজে পেলো পরিবার

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

গত দুই বছর আগে সিলেটের কানাইঘাট শ্রীপুর থেকে হারিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন সন্তান আশিকুর রহমানকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে বান্দরবান থেকে খুঁজে পেলেন তার মা।

সোমবার (১০ মার্চ) সকালে সামাজিক গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বান্দরবান রাজামাঠ এলাকায় তার পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয় তাকে।

তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত দুই বছর আগে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা শ্রীপুর এলাকা থেকে বাজারে যাওয়ার পর হারিয়ে যায় আশিকুর রহমান। দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন দরগা-মাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি তাকে। গত বছর বন্যায় ভেসে গেছেন বলে ধারণা করেছিলেন তার পরিবারের লোক জন। তবে কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলের ভিডিও দেখেন তার মা ও পরিবারের লোকজন। পরে ওই কন্টেন ক্রিয়েটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আজ (সোমবার) বান্দরবান পৌঁছে ছেলেকে বুঝেনেন তার মা মরিয়ম বেগম।

বান্দরবানের কন্টেট ক্রিয়েটর উম্মে হুমায়রা বলেন, মার্চ মাসের তিন তারিখে বালাঘাটা থেকে তিন নাম্বার (থানচি বাস স্টেশন) ব্যক্তিগত কাজে গিয়ে দেখতে পাই ভারসাম্যহীন আশিকুর রহমান ড্রেন থেকে ময়লা খাবার কুড়িয়ে খাচ্ছে। দেখে তার কাছে গিয়ে ময়লা খাবারটি কেড়ে নিয়ে ভালো শুকনা খাবার দেন। এরপর নাম ও ঠিকানা জেনে নিয়ে তিনদিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করার পর আশিকুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। রোববার বিকেলে সিলেট থেকে রওনা দিয়ে সোমবার সকালে বান্দরবানে পৌঁছায়। আশিকুর রহমানকে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান তিনি। এসময় তিনি যুব সমাজের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, এরকম মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ কোথাও দেখা পেলে সহানুভূতির সঙ্গে দেখে সহযোগিতা করলে সেই ভারসাম্যহীন লোকের পরিবারের সদস্যরা হয়তো পরিবারের কাছে ফিরতে পারবে। তখন কেউ ফিরে পাবে তার সন্তানকে ও কেউ ফিরে পাবে তার বাবা-মাকে।

মরিয়ম বেগম বলেন, তার তিন ছেলে এক মেয়ে তার মধ্যে আশিকুর মেজো। দুই বছর আগে হারিয়ে যাওয়ার পর কতো দরগা, মাজারে খুঁজেছিলেন তার প্রিয় সন্তানকে কিন্ত কোথাও না পেয়ে একরকম ছেলেকে পাওয়ার আশায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। গতবছরের বন্যায় ভেসে গিয়ে তার ছেলে আশিকুর রহমান হয়তো মারা গেছেন বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু দু’দিন আগে (শনিবারে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া একজনের ভিডিওর মাধ্যমে জানতে পারেন তার ছেলে বান্দরবানে বেঁচে আছে। তখনই বান্দরবানের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর উম্মে হুমায়রার সঙ্গে যোগাযোগ করে রোববার বিকেলে পরিবারের চার সদস্য নিয়ে সিলেট থেকে এসে সোমবার সকালে বান্দরবানে পৌঁছে উম্মে হুমায়রার সঙ্গে দেখা করে ছেলে আশিকুর রহমানকে বুঝে পেয়েছেন। হারানো সন্তান ফিরে পেয়ে মরিয়ম বেগম আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, একজন ইসলাম ধর্মাবলম্বী হজ্ব করে যেরকম আনন্দে খুশি হয়ে থাকেন। তিনিও তার হারানো ছেলে ফিরে পেয়ে অনুরুপ সেই রকম খুশি হয়েছেন।

এসময় আশিকুর রহমানের পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি বান্দরবানের যুবসমাজের সমাজসেবী সদস্যরা ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।