, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে : সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা জৈন্তাপুরে ব্যবসায়ীর উপর সন্ত্রাসী হামলায় আদালতে মামলা দায়ের ‘সিলেটের পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত এটা বৈষম্যের শামিল’ অসমর্থ মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে : জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসান নির্বাচনের আগেই বয়কট একাংশের : প্রশ্নবিদ্ধ সিলেট উইমেন চেম্বার সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি সিলেটে প্রতিবেশীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি নেত্রীর পদ স্থগিত আমেরিকা ইউরোপের ৫টি দেশসহ উচ্চ শিক্ষার জন্য তিন সহস্রাধিক রেজিষ্ট্রেশন স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালকের দেওয়ানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে
সিলেট প্রেসক্লাবে হতভাগা পিতার সংবাদ সম্মেলন

জৈন্তাপুরে চোরাকারবারী চক্রের অমানবিক নির্যাতনের শিকার যুবক, ব্যবস্থা নিচ্ছেনা পুলিশ

সিলেটের জৈন্তাপুরে সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী চক্রের রোষানলে পড়ে এক গাড়ি চালক অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগী গাড়ি চালকের পিতা জৈন্তাপুরের হেমু ভাটপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছ অভিযোগ করেন, চোরাকারবারীরা পৈশাচিক কায়দায় তার ছেলে সুমন আহমদের হাত পা বেঁধে নির্যাতন করেছে। পরবর্তীতে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে তিনি মামলা দায়ের করলেও জৈন্তাপুর থানা পুলিশ কোন ভূমিকা রাখছে না। গতকাল রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে আেেয়াজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান, তার ছেলে সুমন ডিআই গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। গত ডিসেম্বর মাসে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হরিপুর বাজার থেকে চেরাই চক্রের বিপুল পরিমাণ অবৈধ মালামাল আটক করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত চোরাকারবারীরা এই অবৈধ মালামাল গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়ার জন্য তার ছেলেকে সন্দেহ করে। অথচ, এ ঘটনায় তার ছেলের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এই চোরাকারবারী চক্রের মধ্যে রয়েছে হেমু হাউদপাড়া গ্রামের মো. ইলিয়াছ মিয়ার পুত্র জুবের আহমদ, একই গ্রামের মৃত ফখরুল ইসলাম মোহরীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম, আজিজুর রহমানের পুত্র সোহেল আহমদ ও মৃত হাফিজ মাহমুদ হাসানের পুত্র ইয়াহিয়া মাহমুদ, উপর শ্যামপুর গ্রামের লুদাই মিয়ার পুত্র মো. সালমান আহমদ, লামা শ্যামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের পুত্র ইলিয়াছ মিয়া, আমিন আহমদের পুত্র মো. ফখরুল ইসলাম, মো. রইছ মিয়ার পুত্র মো. সায়েম, শ্যামপুর পাটুয়া গ্রামের মৃত জমসেদ আলী উরফে ছনির মেম্বারের পুত্র লোকমান উরফে লম্বা লোকমান, বাগের খাল দলাইপাড়া গ্রামের হেলাল উদ্দিনের পুত্র আফাজ আহমদ, জুহাইর টুল গ্রামের মুসা মিয়া ওরফে কুটিনার পুত্র নাজিম উদ্দিন, উপর শ্যামপুর গ্রামের লোদাই মিয়ার পুত্র রেজোয়ান, লামা শ্যামপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর পুত্র আমিনুর রশীদ, হেমু ভেলোপাড়া গ্রামের সামসুল হকের পুত্র শাকিল আহমদ, হেমু ভাটোপাড়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের পুত্র জুবের আহমদ, একই গ্রামের মৃত মইন উদ্দিনের পুত্র শাহ আলম সোকাই, লামা শ্যামপুর গ্রামের সামসুল হোসাইনের পুত্র সোয়েব আহমদ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল কুদ্দুস জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা রাতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চোরাকারবারীরা হরিপুর বাজার থেকে তার পুত্রকে অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতন ও খুনের উদ্দেশ্যে একটি প্রাইভেট কারে তুলে লামা শ্যামপুর গ্রামের দিকে নিয়ে যায়। এ খবর শুনে তিনি বিষয়টি জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশকে জানালে অফিসার ইনচার্জ বলেন আমরা বিষয়টি দেখছি। কিন্ত রাত ১১ টা অতিক্রম হয়ে গেলে ও কোন পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ।

আবার যোগাযোগ করলে ওসি বলেন, তাকে এখন অপহরণ করা হয়েছে আপনারা অপহরণের মামলা করেছেন। যদি তাকে হত্যা করে ফেলে সমস্যা নাই আমরা হত্যা মামলা নেব। এ কথা শুনে আব্দুল কুদ্দুছ নিরাশ হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দরবস্ত ক্যাম্পে গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা বিবরণ শুনে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জৈন্তাপুর থানায় যোগাযোগ করেন। তখন পুলিশ জানায় তারা বিষয়টি দেখছে। এ কথা শুনে সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত অফিসার পুলিশকে বলেন, উদ্ধার কাজে আমাদের সহযোগিতা নিতে পারেন। তারপরও সারারাত পুলিশ কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, পরে ভোর রাতে অপহরণকারীরা নিজ থেকে জৈন্তাপুর থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করে আমার ছেলেকে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে ঐ দিন দুপুরে আমার ছেলে সুমনকে পুলিশ হেফাজতে সিলেট কোর্টে নেয়া হয়। সেখানে আদালতের নিকট সে জবানবন্দী রেকর্ড করে।

অবশেষে দীর্ঘ সময় পর পুলিশ তার ছেলেকে উদ্ধার করলেও চোরাকারবারী চক্রের কাউকে গ্রেফতার করেনি। ২৮ ডিসেম্বর রাতেই তিনি বাদী হয়ে উল্লেখিত চোরাকারবারীদের আসামী করে জৈন্তাপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার করেনি। উল্টো ওসি ও মামলার তদন্তারী কর্মকর্তা এসআই শংকর চন্দ্র দেব চোরাকারবারীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার ছেলের উপর নির্যাতনকারী চোরাকারবারী চক্রকে দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশের আইজিপি, সিলেটের ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের প্রতি অনুেেরাধ জানিয়েছেন।

জনপ্রিয়

সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত

সিলেট প্রেসক্লাবে হতভাগা পিতার সংবাদ সম্মেলন

জৈন্তাপুরে চোরাকারবারী চক্রের অমানবিক নির্যাতনের শিকার যুবক, ব্যবস্থা নিচ্ছেনা পুলিশ

প্রকাশের সময় : ১১:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

সিলেটের জৈন্তাপুরে সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী চক্রের রোষানলে পড়ে এক গাড়ি চালক অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগী গাড়ি চালকের পিতা জৈন্তাপুরের হেমু ভাটপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছ অভিযোগ করেন, চোরাকারবারীরা পৈশাচিক কায়দায় তার ছেলে সুমন আহমদের হাত পা বেঁধে নির্যাতন করেছে। পরবর্তীতে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে তিনি মামলা দায়ের করলেও জৈন্তাপুর থানা পুলিশ কোন ভূমিকা রাখছে না। গতকাল রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে আেেয়াজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান, তার ছেলে সুমন ডিআই গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। গত ডিসেম্বর মাসে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হরিপুর বাজার থেকে চেরাই চক্রের বিপুল পরিমাণ অবৈধ মালামাল আটক করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত চোরাকারবারীরা এই অবৈধ মালামাল গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়ার জন্য তার ছেলেকে সন্দেহ করে। অথচ, এ ঘটনায় তার ছেলের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এই চোরাকারবারী চক্রের মধ্যে রয়েছে হেমু হাউদপাড়া গ্রামের মো. ইলিয়াছ মিয়ার পুত্র জুবের আহমদ, একই গ্রামের মৃত ফখরুল ইসলাম মোহরীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম, আজিজুর রহমানের পুত্র সোহেল আহমদ ও মৃত হাফিজ মাহমুদ হাসানের পুত্র ইয়াহিয়া মাহমুদ, উপর শ্যামপুর গ্রামের লুদাই মিয়ার পুত্র মো. সালমান আহমদ, লামা শ্যামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের পুত্র ইলিয়াছ মিয়া, আমিন আহমদের পুত্র মো. ফখরুল ইসলাম, মো. রইছ মিয়ার পুত্র মো. সায়েম, শ্যামপুর পাটুয়া গ্রামের মৃত জমসেদ আলী উরফে ছনির মেম্বারের পুত্র লোকমান উরফে লম্বা লোকমান, বাগের খাল দলাইপাড়া গ্রামের হেলাল উদ্দিনের পুত্র আফাজ আহমদ, জুহাইর টুল গ্রামের মুসা মিয়া ওরফে কুটিনার পুত্র নাজিম উদ্দিন, উপর শ্যামপুর গ্রামের লোদাই মিয়ার পুত্র রেজোয়ান, লামা শ্যামপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর পুত্র আমিনুর রশীদ, হেমু ভেলোপাড়া গ্রামের সামসুল হকের পুত্র শাকিল আহমদ, হেমু ভাটোপাড়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের পুত্র জুবের আহমদ, একই গ্রামের মৃত মইন উদ্দিনের পুত্র শাহ আলম সোকাই, লামা শ্যামপুর গ্রামের সামসুল হোসাইনের পুত্র সোয়েব আহমদ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল কুদ্দুস জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা রাতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চোরাকারবারীরা হরিপুর বাজার থেকে তার পুত্রকে অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতন ও খুনের উদ্দেশ্যে একটি প্রাইভেট কারে তুলে লামা শ্যামপুর গ্রামের দিকে নিয়ে যায়। এ খবর শুনে তিনি বিষয়টি জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশকে জানালে অফিসার ইনচার্জ বলেন আমরা বিষয়টি দেখছি। কিন্ত রাত ১১ টা অতিক্রম হয়ে গেলে ও কোন পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ।

আবার যোগাযোগ করলে ওসি বলেন, তাকে এখন অপহরণ করা হয়েছে আপনারা অপহরণের মামলা করেছেন। যদি তাকে হত্যা করে ফেলে সমস্যা নাই আমরা হত্যা মামলা নেব। এ কথা শুনে আব্দুল কুদ্দুছ নিরাশ হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দরবস্ত ক্যাম্পে গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা বিবরণ শুনে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জৈন্তাপুর থানায় যোগাযোগ করেন। তখন পুলিশ জানায় তারা বিষয়টি দেখছে। এ কথা শুনে সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত অফিসার পুলিশকে বলেন, উদ্ধার কাজে আমাদের সহযোগিতা নিতে পারেন। তারপরও সারারাত পুলিশ কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, পরে ভোর রাতে অপহরণকারীরা নিজ থেকে জৈন্তাপুর থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করে আমার ছেলেকে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে ঐ দিন দুপুরে আমার ছেলে সুমনকে পুলিশ হেফাজতে সিলেট কোর্টে নেয়া হয়। সেখানে আদালতের নিকট সে জবানবন্দী রেকর্ড করে।

অবশেষে দীর্ঘ সময় পর পুলিশ তার ছেলেকে উদ্ধার করলেও চোরাকারবারী চক্রের কাউকে গ্রেফতার করেনি। ২৮ ডিসেম্বর রাতেই তিনি বাদী হয়ে উল্লেখিত চোরাকারবারীদের আসামী করে জৈন্তাপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার করেনি। উল্টো ওসি ও মামলার তদন্তারী কর্মকর্তা এসআই শংকর চন্দ্র দেব চোরাকারবারীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার ছেলের উপর নির্যাতনকারী চোরাকারবারী চক্রকে দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশের আইজিপি, সিলেটের ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের প্রতি অনুেেরাধ জানিয়েছেন।