গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। সোমবার (০৭ এপ্রিল) বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও ছাত্র সংগঠন নগরীতে খণ্ড খণ্ড মিছিল করে। মিছিলে-মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠে নগরী।
এদিকে বিক্ষোভ মিছিলকারী কতিপয় যুবক-তরুণ বাটা, কেএফসিসহ বিভিন্ন দোকান-রেস্তোরাঁয় হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। ইসরায়েলি পণ্য বিক্রির অভিযোগে নগরীর আম্বরখানা, দরগাহগেইট, মিরবক্সটুলা ও জিন্দাবাজার এলাকায় হামলা-ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা।
এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করেছে। এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে সিলেট নগরীতে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। সোমবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বাসিন্দারা স্লোগানে স্লোগানে মিছিল নিয়ে এসে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগদান করেন।
নগরীর চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বন্দরবাজারের কোর্ট পয়েন্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে মুখরিত হয় চারপাশ। বিশ্বব্যাপী ডাকা এ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রাকাশ করে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলেছে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকেল তিনটার দিকে ইসরায়েলি কোমল পানীয় বিক্রির অভিযোগে নগরের মিরবক্সটুলায় অবস্থিত কেএফসি রেস্টুরেন্ট হামলা-ভাঙচুর শুরু করেন বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ সময় তারা রেস্টুরেন্টের ভিতরে থাকা কোকাকোলাসহ বিভিন্ন কোমল পানীয় রাস্তায় ফেলে দেন। একই সময়ে নগরের দরগাহ গেইট এলাকায় বাটা জুতার শোরুম ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকায় বাটার শোরুম ভাঙচুর করে মালামাল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বন্দরবাজার এলাকায়ও বাটার শোরুম ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া নগরের আম্বারখানা পয়েন্টে ইউনিমার্ট শপিং সেন্টারে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের গণহত্যাকারী ইসরায়েলি কোনও প্রতিষ্ঠানের জায়াগা হবে না এ দেশে। কেএফসি রেস্টুরেন্টে ইসরায়েলি বিভিন্ন কোমল পানীয় বিক্রি করা হচ্ছে। এটি মেনে নেওয়া যায় না। ফিলিস্তিনি ভাইদের রক্ষা করতে কোটি কোটি জনতা প্রস্তুত রয়েছে। চলমান হামলা শুধু একটি অঞ্চলের নয়, সমগ্র মুসলিম বিশ্বের প্রতি আঘাত। এর জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে।’
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল যে ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা চালাচ্ছে, তা ইতিহাসের নিকৃষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ, ওআইসি এবং আরব লীগের নীরব ভূমিকা অত্যন্ত হতাশাজনক।’ এ সময় তারা ‘বয়কট বয়কট, ইসরায়েল বয়কট’; ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে থাকেন।
মিরবক্সটুলা এলাকায় ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত কেএফসি রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. রেজাউল করিম। এ সময় যৌথবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।