জরাজীর্ণ ভবন, ওষুধ স্বল্পতা, লোকবল সংকটসহ নানা সমস্যা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে সিলেটের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো। ছয় মাস ধরে ওষুধ ও পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী সরবরাহ না থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত তৃণমূলের নাগরিকরা।
যে সময় সেবা নিতে আসা নানা বয়সী রোগীদের ভিড় লেগে থাকার কথা, সেই সময় সুনসান নীরবতা দেখা যায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। শুধু এই কেন্দ্র নয়, প্রত্যেকটি কেন্দ্রের একই অবস্থা। ওষুধ এবং পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী ছয় মাস ধরে সরবরাহ বন্ধ থাকায় কেন্দ্রমুখো হচ্ছে না কেউ। রোগীরা সেবা নিতে এসে ওষুধ ও পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা যায়।
সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আব্দুল জলিল জানান, ইউনিয়নবাসী ওষুধ ও পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী না পেয়ে তার বাড়িতে ভিড় জমান।
দক্ষিণ সুরমার কুচাই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের এফডব্লিউভি সুমী রায় জানান, অক্টোবর মাস থেকে ওষুধ ও পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ থাকায় রোগীরা আর কেন্দ্রমুখো হচ্ছেন না।
অন্যদিকে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ভগ্নদশার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে ভবন ও বাসভবন। এ কেন্দ্রসহ অধিকাংশ কেন্দ্রে এমন পরিস্থিতিতে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছেন সেবাদানকারীরা।
দাউদপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের এফডব্লিউভি বর-আলী তালুকদার জানান, ঊর্ধ্বতন মহলে বিষয়টি জানানো হলেও সমাধান পাওয়া যাচ্ছেন না।
কুচাই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. জাকারিয়া আহমদ জানান, এই কেন্দ্রে এফডব্লিউভি সুমী রায় ২৪ ঘণ্টা ডিউটিতে থাকলেও আবাসন ব্যবস্থা অত্যন্ত জরাজীর্ণ।
কান্দিগাঁও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের এসএসিএমও নয়ন বণিক জানান, লোকবল সংকটে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নিয়াজুর রহমান জানান, বিভাগের ৬৭টি কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট নেই, অন্যান্য পদে লোকবলের মারাত্মক সংকট নিয়ে সেবা দিতে হচ্ছে কেন্দ্রগুলোকে। ভবনগুলোর ভগ্ন দশার কথা স্বীকার করে বরাদ্দের অপেক্ষায় আছেন বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর অক্টোবরের পর ওষুধ বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এসব কেন্দ্রগুলো থেকে গর্ভবতী ও গর্ভোত্তর, এম, আর, সাধারণ রোগী, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের সেবা, প্রজননতন্ত্রের রোগের সেবা, ইপিআই সেবা, ভিটামিন এ ক্যাপসুল বিতরণ ছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা সেবা দেয়া হয়। এছাড়া কৈশোর প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা দেয়া হয় বলে তিনি জানান।