সিলেটের বিশ্বনাথে দুই প্রবাসী পরিবারের ঈদ–আনন্দ রূপ নিয়েছে বিষাদে। উভয় পরিবারই মধ্যপ্রাচ্যে থাকা নিজেদের স্বজন হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন সড়ক দুর্ঘটনায় ও অন্যজন ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন।
উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের হাসনাজী গ্রামের সাবুল মিয়া (৩৯) গত বুধবার সকালে ওমানের মাসকটে সড়ক দুর্ঘটনায় এবং লামাকাজি ইউনিয়নের ভূরকী গ্রামের ফয়জুল হক (৫৫) গত মঙ্গলবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। গত বুধবার দেশে তাঁদের মৃত্যুর খবর এসেছে। এর পরপরই উভয় পরিবারে চলছে শোক।
সাবুলের ছোট ভাই সাজন মিয়া জানান, তাঁর বড় ভাই প্রায় ৯ বছর প্রবাসে আছেন। এর মধ্যে দুইবার দেশে এসেছিলেন। গত ডিসেম্বরে প্রায় আড়াই মাস ছুটি কাটিয়ে ফিরেছেন। আর এক বছর পর তাঁর একবারে দেশে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই তিনি না–ফেরার দেশে চলে গেছেন।
সাজন আরও জানান, সাবুলের আড়াই বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। শিশুটির আর বাবা ডাকা হলো না। ঈদের পরপরই এত বড় দুঃসংবাদ পাবেন এমনটি অপ্রত্যাশিত ছিল। ওমানে থাকা তাঁদের এলাকার এক ব্যক্তির মাধ্যমে গত বুধবার খবরটি জেনেছেন তাঁরা।
সাবুলের স্বজনেরা জানান, বুধবার সকালে তিনিসহ চারজন গাড়ি নিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। সেখানে যাওয়ার পথে চালক হঠাৎ ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় মাসকটের আমলা-ইবরি এলাকায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই সাবুলসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে তাঁর মরদেহ স্থানীয় একটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। মরদেহটি দেশে আনার বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ চলছে। তাঁরা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সাবুলের মরদেহ দেশে আনা যাবে।
অন্যদিকে ফয়জুল হক সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির শামখা এলাকায় নিজ কর্মস্থলে খুন হয়েছেন। গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তিনি সেখানে সহকর্মীদের হাতে খুন হন। বিষয়টি গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে দেশের স্বজনেরা জানতে পারেন।
ফয়জুলের খালাতো ভাই আলতাফ হোসেন বলেন, ওই দেশে এলাকার কেউ নেই। ফয়জুল হকের এক সহকর্মীর মাধ্যমে তাঁরা বিষয়টি জানতে পেরেছেন। আবুধাবিতে কর্মস্থলে দুই বাংলাদেশি সহকর্মী তাঁকে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন। তাঁরা ওই দেশের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ফয়জুল হকের মরদেহ দেশে আনার ব্যাপারে এখনো তেমন কোনো কিছুই অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। তাঁর পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। স্বজন হারিয়ে তাঁরা হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। প্রায় তিন মাস আগে দেশে ছুটি কাটিয়ে আবুধাবিতে ফিরেছিলেন ফয়জুল।