৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অনেকটা গা-ঢাকা দিয়েই ছিলেন সুনামগঞ্জের চিহ্নিত বালুখেকো, বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আজাদ হোসেন। গত ১৯ মার্চ এক ঠিকাদারকে জিম্মি করে ৮৬ কোটি টাকার কাজ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় পুলিশ হোটেলটি ঘিরে ফেলে।
স্থানীয় এক বিএনপি নেতার শেল্টারে সেখান থেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান তিনি। তারপর থেকে আবারও আত্মগোপনে চলে যান তিনি। শেষ রক্ষা হয়নি।
বুধবার রাতে ঢাকার শান্তিনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) গোয়েন্দা বিভাগ।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজাদ হোসেনসহ গ্রেফতারকৃত ১১ জনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা ও দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৯ মার্চ দুপুরে সিলেটে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারকে অপহরণের পর জোরপূর্বক ৮৬ কোটি টাকার কাজ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। ঠিকাদারের ডাকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে এক ঠিকাদারকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের হয়। তারপর থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
কে এই আজাদ হোসেন
আজাদ হোসেন ১৫ বছর আগেও দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এবং পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ছত্রছায়ায় আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান তিনি। ২০১২ সালে সুরঞ্জিত সেনের কথা বলে রেলে নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন আজাদ।
এরপর ২০১৬ ও ২০১৮ সালে রতনের প্রভাব খাটিয়ে বড় বড় বালুমহাল ইজারা নিয়ে কয়েক কোটি টাকার মালিক হন। ২০২২ সালে তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।