, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে : সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা জৈন্তাপুরে ব্যবসায়ীর উপর সন্ত্রাসী হামলায় আদালতে মামলা দায়ের ‘সিলেটের পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত এটা বৈষম্যের শামিল’ অসমর্থ মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে : জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসান নির্বাচনের আগেই বয়কট একাংশের : প্রশ্নবিদ্ধ সিলেট উইমেন চেম্বার সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি সিলেটে প্রতিবেশীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি নেত্রীর পদ স্থগিত আমেরিকা ইউরোপের ৫টি দেশসহ উচ্চ শিক্ষার জন্য তিন সহস্রাধিক রেজিষ্ট্রেশন স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালকের দেওয়ানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে

সিলেটে মুক্ত পরিবেশে বিএনপি জামায়াতের ঈদ উদযাপন

দীর্ঘসময় পর মুক্ত পরিবেশে এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন সিলেটের বিএনপি-জামায়াতের নেতারা। এতে তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশের পাশাপাশি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আত্মাহুতি দেওয়া ছাত্র-জনতাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।

সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে সিলেটের প্রধান ঈদ জামাত নগরীর শাহী ঈদগাহ প্রাঙ্গনে একসঙ্গে শরীক হয়েছিলেন বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় শীর্ষ নেতারা।

শাহী ঈদগাহে ঈদের নামাজে অংশ গ্রহণ করেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, সাবেক মেয়র ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, মহানগর আমির ফখরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিষ্টার নূরুল হুদা জুনেদ প্রমুখসহ প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির দরগাহে হযরত শাহ জালাল মসজিদে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন, এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। নামাজ শেষে মুসল্লিদের সাথে কুশল বিনিময়ে অংশ গ্রহণ করেন। খন্দকার মুক্তাদির তার কাজিরবাজারস্থ বাস ভবনে দিনভর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

আর জামাতের শীর্ষ নেতারা আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নামাজ আদায় করেছেন।
শাহী ঈদগাহর ঐতিহাসিক ময়দানে আওয়ামী শূন্য সিলেটে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ন পরিবেশ অনুষ্ঠিত বিশাল প্রধান জামাত ইমামতি করেন নগরীর বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুশতাক আহমদ খাঁন।

এর আগে নসিহত পেশ করেন একই মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা কামাল উদ্দিন। শুরুতে বক্তব্য রাখেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান রেজা উন নবী, সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম ও ডিআইজি মুশফেকুর রহমান।
সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদের আনন্দ সবখানে ছড়িয়ে পড়ুক। ধনী-গরিবের মধ্যে যাতে কোনো বৈষম্য না থাকে। সুখী, সমৃদ্ধিশালী ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবাই মিলে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের অভ্যুত্থানে অনেক শহিদ হয়েছেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। এখন আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছে। আমরা আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে নির্বাচন হবে, মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে। শহিদদের রক্ত বৃথা যাবে না।’

এবছর মানুষ মুক্ত পরিবেশে ঈদ করছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘গত ১৬ টি বছরের আনন্দ থেকে এবারের ঈদের আনন্দ ভিন্ন। কারণ গত ঈদগুলোতে একটা দল কিন্তু সমাজের একটা বিশাল অংশকে বিভিন্ন হামলা, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে ঈদ পর্যন্ত করতে দেয়নি। তাদের পরিবারে ঈদের কোনো আনন্দ ছিল না। কিন্তু আজ এ প্রেক্ষাপটে আমরা দেখতে পেয়েছি যে সবাই মিলে কিন্তু ঈদ করছে। তারা কিন্তু নির্বিঘ্নে এবং নিশ্চিন্তে আজ ঈদ করছে। ঈদের এই পবিত্র আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক।’

সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এবাবের ঈদ আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। আমরা স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্টমুক্ত পরিবেশে ঈদ করতে পারছি। যে ছাত্ররা আত্মাহুতি দিয়ে দেশের মানুষকে স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্টের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছে, তাদের স্মরণ করছি। এখন আমাদের সব ভেদাভেদ ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সবাই মিলেমিশে দেশ পুনর্গঠন করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের আমলে প্রায় ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন মামলার কারণে আত্মগোপনে কিংবা কারাগারে ছিলেন সিলেটের বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতা। এবার ঈদুল ফিতরে মুক্ত পরিবেশে সকলেই ফিরেছেন নিজ, নিজ এলাকায়। স্বজন-প্রতিবেশি, এলাকাবাসীর সঙ্গে আনন্দ আয়োজনে উদযাপন করেছেন ঈদ।

জনপ্রিয়

সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত

সিলেটে মুক্ত পরিবেশে বিএনপি জামায়াতের ঈদ উদযাপন

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫

দীর্ঘসময় পর মুক্ত পরিবেশে এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন সিলেটের বিএনপি-জামায়াতের নেতারা। এতে তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশের পাশাপাশি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আত্মাহুতি দেওয়া ছাত্র-জনতাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।

সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে সিলেটের প্রধান ঈদ জামাত নগরীর শাহী ঈদগাহ প্রাঙ্গনে একসঙ্গে শরীক হয়েছিলেন বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় শীর্ষ নেতারা।

শাহী ঈদগাহে ঈদের নামাজে অংশ গ্রহণ করেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, সাবেক মেয়র ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, মহানগর আমির ফখরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিষ্টার নূরুল হুদা জুনেদ প্রমুখসহ প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির দরগাহে হযরত শাহ জালাল মসজিদে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন, এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। নামাজ শেষে মুসল্লিদের সাথে কুশল বিনিময়ে অংশ গ্রহণ করেন। খন্দকার মুক্তাদির তার কাজিরবাজারস্থ বাস ভবনে দিনভর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

আর জামাতের শীর্ষ নেতারা আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নামাজ আদায় করেছেন।
শাহী ঈদগাহর ঐতিহাসিক ময়দানে আওয়ামী শূন্য সিলেটে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ন পরিবেশ অনুষ্ঠিত বিশাল প্রধান জামাত ইমামতি করেন নগরীর বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুশতাক আহমদ খাঁন।

এর আগে নসিহত পেশ করেন একই মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা কামাল উদ্দিন। শুরুতে বক্তব্য রাখেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান রেজা উন নবী, সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম ও ডিআইজি মুশফেকুর রহমান।
সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদের আনন্দ সবখানে ছড়িয়ে পড়ুক। ধনী-গরিবের মধ্যে যাতে কোনো বৈষম্য না থাকে। সুখী, সমৃদ্ধিশালী ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবাই মিলে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের অভ্যুত্থানে অনেক শহিদ হয়েছেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। এখন আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছে। আমরা আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে নির্বাচন হবে, মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে। শহিদদের রক্ত বৃথা যাবে না।’

এবছর মানুষ মুক্ত পরিবেশে ঈদ করছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘গত ১৬ টি বছরের আনন্দ থেকে এবারের ঈদের আনন্দ ভিন্ন। কারণ গত ঈদগুলোতে একটা দল কিন্তু সমাজের একটা বিশাল অংশকে বিভিন্ন হামলা, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে ঈদ পর্যন্ত করতে দেয়নি। তাদের পরিবারে ঈদের কোনো আনন্দ ছিল না। কিন্তু আজ এ প্রেক্ষাপটে আমরা দেখতে পেয়েছি যে সবাই মিলে কিন্তু ঈদ করছে। তারা কিন্তু নির্বিঘ্নে এবং নিশ্চিন্তে আজ ঈদ করছে। ঈদের এই পবিত্র আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক।’

সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এবাবের ঈদ আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। আমরা স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্টমুক্ত পরিবেশে ঈদ করতে পারছি। যে ছাত্ররা আত্মাহুতি দিয়ে দেশের মানুষকে স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্টের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছে, তাদের স্মরণ করছি। এখন আমাদের সব ভেদাভেদ ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সবাই মিলেমিশে দেশ পুনর্গঠন করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের আমলে প্রায় ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন মামলার কারণে আত্মগোপনে কিংবা কারাগারে ছিলেন সিলেটের বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতা। এবার ঈদুল ফিতরে মুক্ত পরিবেশে সকলেই ফিরেছেন নিজ, নিজ এলাকায়। স্বজন-প্রতিবেশি, এলাকাবাসীর সঙ্গে আনন্দ আয়োজনে উদযাপন করেছেন ঈদ।