সুনামগঞ্জে দোয়ারাবাজার উপজেলায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এই রায় দেন। রায়ে ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরীর গর্ভে জন্ম নেওয়া কন্যাসন্তানের বাবা হিসেবে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম যুক্ত করে জন্মনিবন্ধন দিতে নিবন্ধককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত মাহবুবের (৩৫) বাড়ি জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলায়। তিনি পলাতক। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. শামছুর রহমান।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ওই প্রতিবন্ধী কিশোরী ও দণ্ডপ্রাপ্ত মাহবুব প্রতিবেশী। মেয়েটির বাবা ও মায়ের অনুপস্থিতিতে মাহবুব বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। মেয়েটি ২০১৫ সালের ৬ জুন এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। তখন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে প্রতিবেশী মাহবুব এবং তার মা–বাবাসহ অন্যদের জানান, মেয়েটির সঙ্গে এক প্রতিবেশীকে প্রায়ই মেলামেশা করতে দেখেছেন তাঁরা। পরে গ্রামের লোকজন ওই নবজাতকের বাবা হিসেবে ওই ব্যক্তির নাম দিয়ে জন্মনিবন্ধন করানোর সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু মেয়েটি সুস্থ হওয়ার পর পরিবারকে জানায়, তাকে ওই ব্যক্তি নয়, ধর্ষণ করেছে মাহবুব। পরে মাহবুব ও তাঁর পরিবার মেয়েটির উপযুক্ত বয়স হওয়ার পর মাহবুবের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করবে বলে জানায়; কিন্তু কয়েক বছর যাওয়ার পর বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন মাহবুব। এরপর ২০১৯ সালের ১৩ জুন মাহবুবের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন মেয়েরটির বাবা।
আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, জরিমানার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবে নির্যাতনের শিকার মেয়েটি। রায়ে মেয়েটির গর্ভে জন্ম নেওয়া কন্যাসন্তানের বাবার নাম পরিবর্তন করে মাহবুবের নাম উল্লেখ করে নতুন জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।