সিলেট ও এর আশেপাশে ভূ-অভ্যন্তরে একাধিক ফল্ট সক্রিয় থাকায় সিলেটকে ভূমিকম্পের ‘ডেঞ্জার জোন’ বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে ভূমিকম্পের বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেট অঞ্চল।
ফরাসি ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম ১৯৯৮-এর জরিপ অনুযায়ী, ‘সিলেট অঞ্চল’ ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে সক্রিয় ভূ-কম্পন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে।
ভূমিকম্প বিষয়ক বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে জানা যায়, ভূমিকম্পের মাত্রা অনুসারে বাংলাদেশ তিনটি ভূকম্পন বলয়ে বিভক্ত। এর মধ্যে ১ নম্বর বলয়ে রিখটার স্কেলে ৭ থেকে ৯ বা তার অধিক মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। আর এই ১ নম্বর বলয়েই সিলেটের অবস্থান।
ঘন ঘন ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের আভাস। রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে এ অঞ্চলে হতে পারে বড় ধরনের ক্ষতি, ধারণা বিশেষজ্ঞদের। ২০২১ সালের মে মাসে যখন একদিনে ৭ বার ভূমিকম্পে কাপে সিলেট। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারির ও মার্চে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২ বার ভূমিকম্প হয় সিলেটে।
এ ব্যাপারে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন জানান, ভৌগোলিক কারণেই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেট। এ অঞ্চলে ডাউকি, ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ানসহ ১০ টি ফল্ট সক্রিয় রয়েছে। ৬ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে সিলেট বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু সিলেট নয়, পুরো বিভাগই এর শিকার হতে পারে। সেক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেত হবে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, ফল্টগুলো সক্রিয় থাকায় সিলেটে ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। রিখটার স্কেলে এগুলোর মাত্রা থাকছে ৬ এর নিচে। ঘন ঘন ছোট ভূমিকম্প বড় কিছুর আভাস বলে মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, সিলেটের গোয়াইঘাটে জাফলংয়ের ওপারে ভারতের ডাউকি এলাকায় ভূ-গর্ভে ফাটল তৈরি হয় ১৮৯৭ সালে যা ডাউকি ফল্ট হিসেবে চিহ্নিত। এই ফল্টের কারণেই ভূমিকম্পের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেট।