, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে : সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা জৈন্তাপুরে ব্যবসায়ীর উপর সন্ত্রাসী হামলায় আদালতে মামলা দায়ের ‘সিলেটের পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত এটা বৈষম্যের শামিল’ অসমর্থ মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে : জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসান নির্বাচনের আগেই বয়কট একাংশের : প্রশ্নবিদ্ধ সিলেট উইমেন চেম্বার সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি সিলেটে প্রতিবেশীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি নেত্রীর পদ স্থগিত আমেরিকা ইউরোপের ৫টি দেশসহ উচ্চ শিক্ষার জন্য তিন সহস্রাধিক রেজিষ্ট্রেশন স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালকের দেওয়ানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে

সিলেটে আরিফুলের ইফতারে ছিলেন না মুক্তাদীরসহ স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা

সিলেট নগরের বালুচর এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, উন্নয়ন সংগঠক, আলেম-ওলামা, ক্রীড়া-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠকসহ নানা শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। তবে স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এই আয়োজনে দেখা যায়নি।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে আরিফুল হক চৌধুরী দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ (টুকু)।

স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, সিলেটে বিএনপির রাজনীতি এখন দুটি বলয়ে বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে আছেন আরিফুল হক চৌধুরী। অন্যটির নেতৃত্বে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ (নগর ও সদর উপজেলা) আসনে দলীয় প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর। স্থানীয় রাজনীতিতে মুক্তাদীর ও আরিফুল একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত।

গতকাল আরিফুলের দোয়া ও ইফতার মাহফিলে হাজারো মানুষ উপস্থিত থাকলেও খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর ছিলেন না।। এ ছাড়া আরিফুলের ইফতার আয়োজনে অংশ নিতে দেখা যায়নি সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী এবং সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীকে।

এ বিষয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি তাঁদের দাওয়াত করেছি। হয়তো তাঁরা আরও জরুরি কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। তাই আসেননি।’

আরিফুলের ইফতার মাহফিলে যোগ না দেওয়ার বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ এই চার নেতার সঙ্গে। এর মধ্যে এমরান আহমদ চৌধুরী কল ধরেননি। আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও ইমদাদ হোসেন চৌধুরী জানান, আগে থেকেই তাঁদের নিজস্ব কিছু ইফতার কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল। তাই তাঁরা সাবেক মেয়রের কর্মসূচিতে যেতে পারেননি। এখানে বলয়কেন্দ্রিক কোনো রাজনীতি ছিল না বলে তাঁদের দাবি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির অন্তত পাঁচজন নেতা বলেন, আরিফুলের ইফতার মাহফিলে স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের উপস্থিত না থাকার বিষয়টি সবার নজরে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বলয়কেন্দ্রিক রাজনীতির কারণেই তাঁরা কর্মসূচিতে যোগ দেননি। এ ঘটনায় ভবিষ্যতে সিলেটে বিএনপির প্রভাবশালী দুই নেতার বলয়কেন্দ্রিক বিভেদ ও দূরত্ব আরও বাড়বে বলে তাঁরা মনে করেন।

স্থানীয় বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের সুস্থতা কামনা করে দোয়া ও ইফতার মাহফিল আয়োজনের আড়ালে আরিফুল হক চৌধুরী গতকাল মূলত নিজের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সফল শোডাউন করেন। দলের বাইরেও যে তাঁর একটি ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা আছে, সেটা দেখানোও ছিল একটা কৌশল। এ কৌশলের অংশ হিসেবেই ইফতার মাহফিলে দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে অনেকেই ইফতারে অংশ নেন।

এদিকে সিলেট বিএনপির শীর্ষ চার নেতা ইফতার মাহফিলে উপস্থিত না হলেও আরিফুল বলয়ের প্রায় সবাই কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। যাঁরা ইফতার মাহফিলে যোগ দেন, তাঁদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এম এ সালাম, সহক্ষুদ্রঋণ ও কুটিরশিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

জনপ্রিয়

সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত

সিলেটে আরিফুলের ইফতারে ছিলেন না মুক্তাদীরসহ স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা

প্রকাশের সময় : ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

সিলেট নগরের বালুচর এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, উন্নয়ন সংগঠক, আলেম-ওলামা, ক্রীড়া-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠকসহ নানা শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। তবে স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এই আয়োজনে দেখা যায়নি।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে আরিফুল হক চৌধুরী দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ (টুকু)।

স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, সিলেটে বিএনপির রাজনীতি এখন দুটি বলয়ে বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে আছেন আরিফুল হক চৌধুরী। অন্যটির নেতৃত্বে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ (নগর ও সদর উপজেলা) আসনে দলীয় প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর। স্থানীয় রাজনীতিতে মুক্তাদীর ও আরিফুল একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত।

গতকাল আরিফুলের দোয়া ও ইফতার মাহফিলে হাজারো মানুষ উপস্থিত থাকলেও খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর ছিলেন না।। এ ছাড়া আরিফুলের ইফতার আয়োজনে অংশ নিতে দেখা যায়নি সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী এবং সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীকে।

এ বিষয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি তাঁদের দাওয়াত করেছি। হয়তো তাঁরা আরও জরুরি কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। তাই আসেননি।’

আরিফুলের ইফতার মাহফিলে যোগ না দেওয়ার বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ এই চার নেতার সঙ্গে। এর মধ্যে এমরান আহমদ চৌধুরী কল ধরেননি। আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও ইমদাদ হোসেন চৌধুরী জানান, আগে থেকেই তাঁদের নিজস্ব কিছু ইফতার কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল। তাই তাঁরা সাবেক মেয়রের কর্মসূচিতে যেতে পারেননি। এখানে বলয়কেন্দ্রিক কোনো রাজনীতি ছিল না বলে তাঁদের দাবি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির অন্তত পাঁচজন নেতা বলেন, আরিফুলের ইফতার মাহফিলে স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের উপস্থিত না থাকার বিষয়টি সবার নজরে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বলয়কেন্দ্রিক রাজনীতির কারণেই তাঁরা কর্মসূচিতে যোগ দেননি। এ ঘটনায় ভবিষ্যতে সিলেটে বিএনপির প্রভাবশালী দুই নেতার বলয়কেন্দ্রিক বিভেদ ও দূরত্ব আরও বাড়বে বলে তাঁরা মনে করেন।

স্থানীয় বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের সুস্থতা কামনা করে দোয়া ও ইফতার মাহফিল আয়োজনের আড়ালে আরিফুল হক চৌধুরী গতকাল মূলত নিজের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সফল শোডাউন করেন। দলের বাইরেও যে তাঁর একটি ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা আছে, সেটা দেখানোও ছিল একটা কৌশল। এ কৌশলের অংশ হিসেবেই ইফতার মাহফিলে দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে অনেকেই ইফতারে অংশ নেন।

এদিকে সিলেট বিএনপির শীর্ষ চার নেতা ইফতার মাহফিলে উপস্থিত না হলেও আরিফুল বলয়ের প্রায় সবাই কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। যাঁরা ইফতার মাহফিলে যোগ দেন, তাঁদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এম এ সালাম, সহক্ষুদ্রঋণ ও কুটিরশিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।