, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি সিলেট সদর উপজেলার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত জমি বিরোধের জেরে সিলেটে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, অব্যাহত থাকবে ৫ দিন সিলেটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে : সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা জৈন্তাপুরে ব্যবসায়ীর উপর সন্ত্রাসী হামলায় আদালতে মামলা দায়ের ‘সিলেটের পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত এটা বৈষম্যের শামিল’ অসমর্থ মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে : জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসান নির্বাচনের আগেই বয়কট একাংশের : প্রশ্নবিদ্ধ সিলেট উইমেন চেম্বার
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে
দেখা দিয়েছে একাধিক ফাঁটল

অযত্ন অবহেলায় ১১৭ কোটি টাকার সিলেট বাস টার্মিনাল

শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। উদ্বোধনের আগেই অব্যবস্থাপনায় ডুবে আছে টার্মিনালটি। অযত্ন অবহেলায় ভবনের অভ্যন্তরে থাকা দামি জিনিসপত্রগুলো নষ্ট হচ্ছে। বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জের চেয়ারগুলোয় জং ধরেছে। ভেতরের ইলেকট্রনিক ফিটিংসগুলোও ঝুলে আছে। টার্মিনালের অত্যাধুনিক অনেক জিনিসপত্র ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, সিলেট নগরীর কদমতলী এলাকায় ৮ একর ভুমিতে প্রায় ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ‘সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল’। প্রায় দুই বছর আগে দৃষ্টিনন্দন এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হলেও নির্মাণে ক্রুটি, নামকরণসহ নানা জটিলতায় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। তবে বছর দেড়েক আগে পরীক্ষামূলকভাবে টার্মিনাল চালু হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূল স্থাপনায় কোনো ত্রটি ছিল না, সৌন্দর্য বর্ধনের কিছু জায়গায় নকশায় ক্রটির জন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব অসঙ্গতি দূর করার কাজ চলছে। এসব সমস্যার সমাধান হলেই টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে।

এদিকে, উদ্বোধনের আগেই অযত্ন অবহেলায় টার্মিনালের ওয়েটিং লাউঞ্জের বেশিরভাগ চেয়ার ভেঙে গেছে। ফাঁটল দেখা দিয়েছে ভবনের একাধিক অংশে। যাত্রীদের জন্য প্রায় দেড় হাজার আসনের বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জের অনেক কক্ষে থাকা চেয়ারে জং ধরেছে। কোথাও কোথাও চেয়ারের হাতলের অংশ রয়েছে তবে, বসার অংশটুকু নেই। এছাড়াও ভবনের ভেতরে একাধিক স্থানে ইলেকট্রনিক্স ফিটিংসগুলোও ঝুলে থাকতে দেখা গেছে। কারুকার্যময় লাল ইটের দেয়ালে জমেছে ধুলো। ইট রঙের স্টিলের ছাউনিতে জং ধরেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, টার্মিনালে একটার পর একটা বাস এসে একদিকে ঢুকছে আবার অন্য পথ দিয়ে বের হচ্ছে। যাত্রীরা উঠানামা করছেন। অনেকে ওয়েটিং রুমে বসে বাসের অপেক্ষা করছেন। টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে দেখা গেল পাশের বিশাল সড়কের পুরোটা জুড়েই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে শত শত গাড়ি। সড়কজুড়ে এলোপাতাড়ি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের।

জানা গেছে, সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন দূরপাল্লার প্রায় পাঁচশ বাস ছেড়ে যায়। তারচেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক বাস চলাচল করে আন্তজেলা রুটে। টার্মিনালের ভেতরে আন্তজেলা রুটের বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। তবে দূরপাল্লার কয়েশ বাস তাদের নিজস্ব কাউন্টার ছাড়িয়ে সড়কের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় এই সড়কে সবসময়ই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।

সিসিক সূত্র জানায়, মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট-এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ফেব্রæয়ারিতে। প্রায় ৮ একর জমির ওপর এই টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য ৫৬ কোটি টাকা এবং টার্মিনালের অবকাঠামো উন্নয়নে ৬১ কোটি টাকা।

ছয়তলা ভিত্তির তিনতলা কমপ্লেক্সটি তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম অংশের ‘বহির্গমন ভবনের দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩০০ ফুট। এই অংশে ৪৮টি বাস একসঙ্গে থাকতে পারবে। এ ছাড়া যাত্রীদের বসার জন্য রয়েছে ৯৭০ আসনের বিশাল হল। রয়েছে ৩০ আসনের ভিআইপি কক্ষ, ৩০টি টিকিট কাউন্টার ও নামাজের জন্য আলাদা কক্ষ। রয়েছে পুরুষ, নারী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের ব্যবহার উপযোগী ছয়টি টয়লেট। প্রয়োজনে হুইল চেয়ার নিয়েও টয়লেট ব্যবহার করা যাবে। উপরে উঠার জন্য রয়েছে লিফট এবং খাবারের জন্য রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট। অসুস্থ যাত্রীদের জন্য আলাদা শয্যা ও ব্রেস্ট ফিডিং জোনও রয়েছে।

দ্বিতীয় অংশে ‘আগমনী ভবন’ প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে। এখানে রয়েছে বাস বে, ৫১০ আসনের বসার স্থান ও ৩০ আসনের ভিআইপি কক্ষ, আধুনিক টয়লেট সুবিধা, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, লিফট, রেস্টুরেন্টসহ অন্যান্য সুবিধা। ‘আগমন ভবন’ ও ‘বহির্গমন ভবন’ আলাদা করা হলেও করিডোরের মাধ্যমে পুরো স্থাপনাকে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এই ভবনের পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে সড়কের সঙ্গে গোলাকার পাঁচতলা টাওয়ার ভবনে রয়েছে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়। যেখানে থাকবে পুরো টার্মিনালের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ও সিসিটিভি মনিটরিং কক্ষ, পুলিশ কক্ষ ও পর্যটন কার্যালয়। টার্মিনালের পেছনের দিকে তৃতীয় অংশে নির্মিত হয়েছে একটি মাল্টিপারপাস ওয়েলফেয়ার সেন্টার। যেখানে মালিক ও চালক সমিতির জন্য আছে ২৪ বেডের বিশ্রামকক্ষ, ক্যান্টিন, সভা অনুষ্ঠানের জন্য মাল্টিপারপাস মিলনায়তন। যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্কশপ স্থাপন করা হয়েছে।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম জানান, টার্মিনালে বাস রাখার জায়গার তুলনায় বিল্ডিং বেশি হয়ে গেছে। আমাদের প্রায় ১ হাজারের মতো বাস আছে। কিন্তু যে টার্মিনাল বানানো হয়েছে তাতে মাত্র দেড়শো থেকে দুইশোর মতো বাস রাখা যাবে। বাকি বাস তো আগের মতোই রাস্তায় রাখতে হবে।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, টার্মিনালটি পরীক্ষামূলক চালুর সময় নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এসব অসঙ্গতি দূর করার কাজ চলছে। কিছু কিছু সমস্যা আছে সেগুলো দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাস টার্মিনালের উদ্বোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টার্মিনালের নাসকরণসহ আরও কিছু জটিলতা রয়েছে। আমরা এ সংক্রান্ত একটি ফাইল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত সাড়া মেলেনি। বর্তমানে বাস টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ লিজ নিয়ে এটি পরিচালনা করছেন। চিহ্নিতসমস্যাগুলোর সমাধান ও মন্ত্রণালয়ের সাড়া পেলে টার্মিনালের উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

জনপ্রিয়

সিলেটে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা

দেখা দিয়েছে একাধিক ফাঁটল

অযত্ন অবহেলায় ১১৭ কোটি টাকার সিলেট বাস টার্মিনাল

প্রকাশের সময় : ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। উদ্বোধনের আগেই অব্যবস্থাপনায় ডুবে আছে টার্মিনালটি। অযত্ন অবহেলায় ভবনের অভ্যন্তরে থাকা দামি জিনিসপত্রগুলো নষ্ট হচ্ছে। বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জের চেয়ারগুলোয় জং ধরেছে। ভেতরের ইলেকট্রনিক ফিটিংসগুলোও ঝুলে আছে। টার্মিনালের অত্যাধুনিক অনেক জিনিসপত্র ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, সিলেট নগরীর কদমতলী এলাকায় ৮ একর ভুমিতে প্রায় ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ‘সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল’। প্রায় দুই বছর আগে দৃষ্টিনন্দন এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হলেও নির্মাণে ক্রুটি, নামকরণসহ নানা জটিলতায় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। তবে বছর দেড়েক আগে পরীক্ষামূলকভাবে টার্মিনাল চালু হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূল স্থাপনায় কোনো ত্রটি ছিল না, সৌন্দর্য বর্ধনের কিছু জায়গায় নকশায় ক্রটির জন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব অসঙ্গতি দূর করার কাজ চলছে। এসব সমস্যার সমাধান হলেই টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে।

এদিকে, উদ্বোধনের আগেই অযত্ন অবহেলায় টার্মিনালের ওয়েটিং লাউঞ্জের বেশিরভাগ চেয়ার ভেঙে গেছে। ফাঁটল দেখা দিয়েছে ভবনের একাধিক অংশে। যাত্রীদের জন্য প্রায় দেড় হাজার আসনের বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জের অনেক কক্ষে থাকা চেয়ারে জং ধরেছে। কোথাও কোথাও চেয়ারের হাতলের অংশ রয়েছে তবে, বসার অংশটুকু নেই। এছাড়াও ভবনের ভেতরে একাধিক স্থানে ইলেকট্রনিক্স ফিটিংসগুলোও ঝুলে থাকতে দেখা গেছে। কারুকার্যময় লাল ইটের দেয়ালে জমেছে ধুলো। ইট রঙের স্টিলের ছাউনিতে জং ধরেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, টার্মিনালে একটার পর একটা বাস এসে একদিকে ঢুকছে আবার অন্য পথ দিয়ে বের হচ্ছে। যাত্রীরা উঠানামা করছেন। অনেকে ওয়েটিং রুমে বসে বাসের অপেক্ষা করছেন। টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে দেখা গেল পাশের বিশাল সড়কের পুরোটা জুড়েই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে শত শত গাড়ি। সড়কজুড়ে এলোপাতাড়ি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের।

জানা গেছে, সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন দূরপাল্লার প্রায় পাঁচশ বাস ছেড়ে যায়। তারচেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক বাস চলাচল করে আন্তজেলা রুটে। টার্মিনালের ভেতরে আন্তজেলা রুটের বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। তবে দূরপাল্লার কয়েশ বাস তাদের নিজস্ব কাউন্টার ছাড়িয়ে সড়কের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় এই সড়কে সবসময়ই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।

সিসিক সূত্র জানায়, মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট-এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ফেব্রæয়ারিতে। প্রায় ৮ একর জমির ওপর এই টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য ৫৬ কোটি টাকা এবং টার্মিনালের অবকাঠামো উন্নয়নে ৬১ কোটি টাকা।

ছয়তলা ভিত্তির তিনতলা কমপ্লেক্সটি তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম অংশের ‘বহির্গমন ভবনের দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩০০ ফুট। এই অংশে ৪৮টি বাস একসঙ্গে থাকতে পারবে। এ ছাড়া যাত্রীদের বসার জন্য রয়েছে ৯৭০ আসনের বিশাল হল। রয়েছে ৩০ আসনের ভিআইপি কক্ষ, ৩০টি টিকিট কাউন্টার ও নামাজের জন্য আলাদা কক্ষ। রয়েছে পুরুষ, নারী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের ব্যবহার উপযোগী ছয়টি টয়লেট। প্রয়োজনে হুইল চেয়ার নিয়েও টয়লেট ব্যবহার করা যাবে। উপরে উঠার জন্য রয়েছে লিফট এবং খাবারের জন্য রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট। অসুস্থ যাত্রীদের জন্য আলাদা শয্যা ও ব্রেস্ট ফিডিং জোনও রয়েছে।

দ্বিতীয় অংশে ‘আগমনী ভবন’ প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে। এখানে রয়েছে বাস বে, ৫১০ আসনের বসার স্থান ও ৩০ আসনের ভিআইপি কক্ষ, আধুনিক টয়লেট সুবিধা, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, লিফট, রেস্টুরেন্টসহ অন্যান্য সুবিধা। ‘আগমন ভবন’ ও ‘বহির্গমন ভবন’ আলাদা করা হলেও করিডোরের মাধ্যমে পুরো স্থাপনাকে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এই ভবনের পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে সড়কের সঙ্গে গোলাকার পাঁচতলা টাওয়ার ভবনে রয়েছে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়। যেখানে থাকবে পুরো টার্মিনালের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ও সিসিটিভি মনিটরিং কক্ষ, পুলিশ কক্ষ ও পর্যটন কার্যালয়। টার্মিনালের পেছনের দিকে তৃতীয় অংশে নির্মিত হয়েছে একটি মাল্টিপারপাস ওয়েলফেয়ার সেন্টার। যেখানে মালিক ও চালক সমিতির জন্য আছে ২৪ বেডের বিশ্রামকক্ষ, ক্যান্টিন, সভা অনুষ্ঠানের জন্য মাল্টিপারপাস মিলনায়তন। যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্কশপ স্থাপন করা হয়েছে।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম জানান, টার্মিনালে বাস রাখার জায়গার তুলনায় বিল্ডিং বেশি হয়ে গেছে। আমাদের প্রায় ১ হাজারের মতো বাস আছে। কিন্তু যে টার্মিনাল বানানো হয়েছে তাতে মাত্র দেড়শো থেকে দুইশোর মতো বাস রাখা যাবে। বাকি বাস তো আগের মতোই রাস্তায় রাখতে হবে।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, টার্মিনালটি পরীক্ষামূলক চালুর সময় নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এসব অসঙ্গতি দূর করার কাজ চলছে। কিছু কিছু সমস্যা আছে সেগুলো দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাস টার্মিনালের উদ্বোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টার্মিনালের নাসকরণসহ আরও কিছু জটিলতা রয়েছে। আমরা এ সংক্রান্ত একটি ফাইল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত সাড়া মেলেনি। বর্তমানে বাস টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ লিজ নিয়ে এটি পরিচালনা করছেন। চিহ্নিতসমস্যাগুলোর সমাধান ও মন্ত্রণালয়ের সাড়া পেলে টার্মিনালের উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।